প্রেরণা সিরিজ - ১২৬,PRERANA
SERIES-126 (Motivational & Inspirational)
লেখক – প্ৰদীপ কুমার রায়।
আগেই বলে
নিচ্ছি কেননা তোমরা পরে ভুলে যাবে বাকি অন্যান্যদের সাহায্যের উদ্দেশ্যে
শেয়ারটা মনে করে,করে দেবে এবং ডানদিকের উপরের কোনে অনুসরণ বাটন অবশ্যই ক্লিক করে
অনুসরণ করবে।শুরু করছি আজকের বিষয় ।নমস্কার বন্ধুরা আমি প্রদীপ তোমাদের
সবাইকে আমার এই Pkrnet Blog এ স্বাগতম।আশা করি সবাই তোমরা ভালোই
আছো আর সুস্থ আছো।
“তুমি সেইসবকে নিয়ে শোক করো যা শোক করার যোগ্যই নয়, কিন্তু তবুও জ্ঞানের কথা বলো | বুদ্ধিমান ব্যক্তি না জীবিত আর নাই বা মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে শোক পালন করে” | “আমার কাছে কেউই ঘৃণিত নয় আর নাই বা কেউ প্রিয়, কিন্তু যে ভক্তির সাথে আমার পূজো করে সে সর্বদা আমার সাথেই থাকে আর আমি তার সাথে” | “আমার-তোমার, ছোট-বড়, আপন-অপরজন এই ধরনের চিন্তা মন থেকে দূর করে দেও, তাহলে সবাই তোমার আর তুমি সবার হবে” |“জীবন না ভবিষ্যতে আছে আর নাই বা আছে অতীতে, জীবন তো কেবল এই মূহুর্তে আছে; অর্থাৎ এই মূহুর্তের অনুভব করাকেই জীবন বলে” |“আজ যা কিছু তোমার আছে, সেটা আগে অন্য কারোর ছিলো আর ভবিষ্যতেও কোনো কারোরই হয়ে যাবে | পরিবর্তনই সংসারের নিয়ম” | “যে মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা, তার কাছে সেটা শত্রুর সমান হয়ে থাকে” |“যেকোনো ব্যক্তি যা চায় জীবনে সেটাই হতে পারে, যদি সে বিশ্বাসের সাথে সেই বিষয়ের উপর চিন্তা করে” |“মানুষ নিজের বিশ্বাসের দ্বারা নির্মিত হয়ে থাকে | যেমনটা সে বিশ্বাস করে, তেমনটাই সে হয়ে ওঠে” |“কর্ম আমাকে বাঁধেনা, কারণ আমার কর্মের ফলের প্রতি কোনো আসক্তি নেই”| “নিজের অনিবার্য কর্ম যা তা করো, কারণ কর্ম করা নিষ্ক্রিয়তার থেকে অনেক ভালো” |“ফলের আশা ছেড়ে কর্ম করে যাওয়া পুরুষই, নিজের জীবনকে সফল বানায়” |“সর্বদা সন্দেহ করে যাওয়া মানুষের প্রসন্নতা পাওয়া, না এই জীবনে সম্ভব আর না অন্য জীবনে” |“হে অর্জুন, তুমি যুদ্ধও করো আর আমাকে স্মরণও করো”|“মানুষ তার কামনা অনুযায়ী পরবর্তী জন্ম পায়” – Shri Krishna
একটা গ্রামে মনা আর ধনা নামে দুই যুবক বাস করত । তারা দুজনেই বেকার । দিনমজুরের কাজ ছাড়া গ্রামে আর কোনো কাজই তারা দেখছে না । এইদিকে নব বিবাহিতা স্ত্রী নিয়ে দুজনের একই রকম পারিবারিক অবস্থা । ভিন্ন মানসিকতার হলেও দুজনের একটাই সাধারণ সমস্যা , আর সেটা হলো কী করে টাকা রোজগার করা যায় । এই সব ভাবতে ভাবতে মনার মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল । সে ধনাকে বলল দুজনে মিলে যদি একটা মহিষ কেনা যায় , তাহলে কেমন হবে । মহিষের দুধ বিক্রি ক’রে কিছু টাকা পাওয়া যাবে । আর মহিষের বাচ্চাও হবে , ফলে মহিষের সংখ্যা বাড়তে থাকবে । দুধও বেশি বেশি হবে । আর এভাবে দুজনই একদিন অনেক টাকার মালিক হয়ে যাবে । মহিষের সংখ্যা যখন বাড়বে , তখন অনেক লোক রাখবে দেখাশুনার জন্য —-এভাবে দুজনই একদিন ধনী হয়ে উঠবে ।
এভাবে মনা তার ভাবনার কথা ধনাকে জানায় । এই প্রস্তাবটি ধনারও খুব ভালো লাগে । সেও প্রস্তাবে রাজী হয়ে যায় । তারা দুজনে কথা পাক্কা করে ফেলে । খুব আনন্দ আর উদ্দীপনা নিয়ে দুজনেই বাড়ি যায় । দুজনেই তাদের এই উদ্যোগের কথা নিজের স্ত্রীকে জানায় । মনার স্ত্রী সব শুনে খুব আনন্দের সঙ্গে তার গয়না খুলে স্বামীর হাতে দিয়ে বলল ” খুব ভালো পরিকল্পনা , আমার গয়না বিক্রি করে মহিষ কেনো । যখন বেশি বেশি রোজগার হবে , গয়না কিনতে আর কতক্ষন । ” স্ত্রীর কথায় গর্বিত হয় মনা । ঐদিকে ধনা তার পরিকল্পনার কথা স্ত্রীকে জানালে তার স্ত্রী বলে , ” দেখো একে তো আমাদের কিছুই নেই । খালি কয়েকটা মাত্র গয়না সম্বল । আর তা বিক্রি করে মহিষ কিনবে । কিন্তু যদি মহিষ মরে যায় ”। ধনার মনেও খটকা লাগে । মনে হয় তার স্ত্রী ঠিকই বলছে । কারণ মহিষ যদি মরে যায় , একমাত্র সম্বল গয়নাগাটিও যাবে — মহিষও যাবে । এত ঝুঁকি নেওয়াটা ভুল হবে ।
পরের দিন দুই বন্ধুর দেখা হলে ধনা বলে ” ভাই মনা , মহিষ যদি মরে তাহলে…. ? “মনা বলে , ” এসব বাজে কথা ভাবছিস কেন ? কেনার আগেই মহিষ মরার কথা ভাবছিস ? আর মহিষ কোন কারণেই বা মরতে যাবে ? ”ধনা একই সুরে হতাশ জবাব দেয় , ” তা তো বুঝলাম যে মহিষ মরবে না । কিন্তু ধর , যদি মরে ? তাহলে কী হবে ? “মনা অত্যন্ত স্নেহ ভ’রে জবাব দেয় , “তোর ‘তাহলে’র জবাব আমার কাছে নেই । ”ধনা বলে ” এই তাহলে’র জবাব আমার কাছে আছে । আমরা বরবাদ হয়ে যাবো । সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবো । “অত্যন্ত বেদনাহত হয়ে মনা বলে , ” কিন্তু তুই কেন বার বার ভাবছিস যে মহিষটা মরে যাবে ,একটু অন্যভাবে ভেবে দেখ , মহিষটা দুধ দেবে । আমরা বিক্রি করবো । প্রথমে পয়সাগুলো জমাবো । তারপর আরও মহিষ কিনবো । অনেক পয়সা হবে যখন , তখন অনেক গয়না কেনা যাবে , বাড়িও বানানো যাবে । এভাবে দুধের বড় ব্যবসায়ী হয়ে উঠব দুজন । ”কিন্তু ধনার ওই এক বুলি ” ব্যবসা টাকা বাড়ি গয়না সব হবে তখনই , যখন মহিষটা বেঁচে থাকবে । ”এরপর অনেক বোঝানোর পরেও ধনা তোতাপাখির মতো বলতে থাকে মহিষ মরার কথা ।মনা আর বোঝাতে পারে না শুধু বলে , ” দেখ ধনা , ঐরকম ভাবলে তুই কোনোদিনও কোনো কাজ করতে পারবি না । এই ধরণের ভাবনা ঠিক নয় । কারণ তুই আগে অন্ধকার দিকটাই দেখছিস । ” এইভাবে দুই বন্ধুর তর্কের পর কয়েকদিন গেল ।
মনা একাই একটা দুগ্ধবতী মহিষ কিনে ফেলে । সে এখন আর দিন মজুরের কাজে যায় না । সকাল থেকে সন্ধ্যা মহিষের দেখাশুনা করে , দুধ দোয় । প্রথম কিছুদিন দুধের গ্রাহক খুঁজতে , মহিষের পরিচর্যা করতে কষ্ট হয়েছিল । ধীরে ধীরে মনা এই কাজগুলোতে দক্ষ হয়ে উঠতে লাগলো । আর দিনমজুরের কাজের শেষে ধনা রোজ তার কাছে আসতো , আর মনার সংঘর্ষ করার , পরিশ্রমের বিষয়টি দেখতো । আর ভাবতো তাদের দিনমজুরের জীবন কত ভালো ছিল । রোজ সকালে কাজে যেত আর বিকেলে ফিরে এসে সন্ধ্যায় কাজ কর্মহীন আড্ডা দিতে পারত । এখন মনার জীবনে আড্ডা দেবার অবসর নেই । তার উপর এত ঝুঁকি নিয়ে কেন যে মহিষ কিনলো । যদি মরেই যায় । সবই যাবে তার । আর ঐ দিকে কালো মহিষের মধ্যেই জীবনের আলো দেখতে পায় মনা । সে দ্বিগুন উৎসাহে কাজ করতে লাগলো । এটা ঠিক যে তার কাছে এখন অবসর নেই । কিন্তু সুন্দর ভবিষ্যতের কল্পনায় সময় নষ্ট করতে সে রাজি নয় ।এইভাবে দিন যায় । আস্তে আস্তে তার গ্রাহক বাড়তে থাকে । মহিষ বাড়তে থাকে । কাজের লোকও বাড়তে থাকে । মহিষও তার মরে নি ।অন্যদিকে ধনা মহিষের মরার কথা ভাবে আর একইভাবে দিনমজুরের কাজ করে যায় । মনা ধনী হতে থাকে ক্রমশঃ । নো রিস্ক নো গেইন । ঝুঁকি নিতে পারলেই জীবনে সাফল্য আসবে ।
জীবনে
অনুপ্রেরণার গুরুত্ব যে কতটা, তা আমরা কমবেশি প্রত্যেকেই জানি। প্রত্যেক
মানুষই চায় তারা যেন সর্বদা অনুপ্রাণিত থাকেন। এই অনুপ্রেরণা মূলক বিচার
গুলিকে বাস্তব জীবনে ঠিক মত মেনে চললে যে কোনো মানুষের জীবন অনয়াসেই বদলে
যেতে পারে ।
মোটিভেশনাল
ভিডিও দেখতে উপরের ডানদিকের কর্নারে YouTube লিঙ্ক অথবা এখানে Pkrnet এই লিঙ্কটির
উপর ক্লিক করুন। এতক্ষণ সময় দিয়ে পড়ার জন্যে তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই
পিকেআর নেট ব্লগ - এর পক্ষ থেকে | পোস্টটা ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই একটু
Comment করে তোমার মতামত আমায় জানিও |তোমার মূল্যবান মতামত আমাকে বাড়তি
অনুপ্রেরণা যোগাতে ভীষনভাবে সাহায্য করে।
![]() |
No comments:
Post a Comment