Wednesday 31 July 2019

How to Improve Your Motivational Skill, Prerana Series-3

প্রেরণা সিরিজ - 3
লেখক - প্রদীপ কুমার রায়
                                                কোনো ধরা বা বাঁধা  ধারণা  বা বিশ্বাসের কাছে নিজেকে সমর্পন করতে নেই , কারন সেগুলো অন্যের চিন্তাভাবনার ফল। অন্যের মতামতের কোলাহল নিজের অন্তরের কণ্ঠস্বরকে হারিয়ে দিতে যেতে নেই। সবচেয়ে বড়কথা নিজের হৃদয় এবং অন্তর্দৃষ্টিকে অনুসরণ করার সাহস রাখা  নিজের ভিতরে আমি কোনো না কোনওভাবে আমি জানি ,আমি সত্যই কি করতে চাই। সেটাই আসল কথা, বাকি সব কিছু গৌণ। স্টে হাংরি , স্টে ফুলিশ ভিতরের খিদেটা  হারালে হবে না, হিসেবি হলে চলবে  না।
                                              
WBCS QUESTIONS
                                             মনের প্রবল ইচ্ছা সাফল্যের দরজায় পৌঁছে দেয়, আর পরিশ্রম সেই দরজা পার করে সাফল্য এনে দেয় প্রতিটি বিপদের মধ্যে কিছু সুযোগ এবং প্রতি সুযোগের মধ্যে কিছু বিপদ আছে। আজ  যে ধারণাটাকে সঠিক বলে মনে হচ্ছে  সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কোনোদিন তাই বেঠিক হয়ে যেতে পারে। হয়তো এরই নাম আধুনিকতা বা সময়ের সঙ্গে পা মিলিয়ে চলা। আপোষ করা চারিত্রিক দুর্বলতার নামান্তর মাত্র। প্রত্যয় এবং আত্মবিশ্বাস খুব জরুরি যদি তুমি কিছু অর্জন করতে চাও তবে তোমাকে আত্মবিশ্বাস নিয়ে তা করার জন্য এগিয়ে যেতে হবে।
                                             
                                           যদি ঠিকঠাক চলে তবে পরিবর্তন চাওয়ার কোনো মানে হয় না কিন্তু যদি প্রয়োজন হয় তবে অবশ্যই পরিবর্তন চাওয়া উচিত  এবং নিজেকে পরিবর্তিত করা উচিত। যেকোনো সমস্যার সামনে দাঁড়িয়ে সমাধানের বিকল্প পথ অনুসন্ধান করতে হবে। ভুল আনন্দের না হলেও , উন্নতির সৌধস্তম্ভ ভুল করলেও চেষ্টা ছাড়া উচিত নয় ভুল করে চুপ করে বসে থাকা আরও বড় ভুল ভুল হলে ভয় না পেয়ে তার থেকে শিক্ষা নিতে হবে এক ভুল বার বার করা উচিত নয় অতীতের ভুল থেকে  শিক্ষা না নিলে ভুল বার বার হতে থাকবে। সফল হতে গেলে ভুল হলেও হতে পারে, কিন্তু লেগে থাকার মানসিকতাই শেষে সফলতা নিয়ে আসবে।
                                     

                                                  বিজয়ীরা ভিন্ন ধরনের কাজ করে না, তারা একই কাজ ভিন্নভাবে করে। প্রত্যেক মানুষের এবং ঘটনার ইতিবাচক দিকটাই গ্রহণীয়। সুখী হওয়ার মানদণ্ড নিজেকে ঠিক করতে হবে সময় সমান যায় না, তাই নেতিবাচক সমালোচনায় অবিচলিত থাকতে হবে। আমার থেকে যারা কম সৌভাগ্যবান তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে যাওয়া আমার কর্তব্য। দুশ্চিন্তা না করে , প্রতিকূল অবস্থা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে হবে এবং  নিজেকে অপরকে ক্ষমা করতে শিখতে হবে।

মোটিভেশনাল ভিডিও দেখতে উপরের ডানদিকের কর্নারে YouTube লিঙ্ক অথবা  এখানে Pkrnet এই লিঙ্কটির উপর ক্লিক করুন।







Tuesday 30 July 2019

ওলাইচন্ডী বা বারোয়ারি পূজা - Olaichandi Puja

লেখক - প্রদীপ কুমার রায় ।
                                                    অতীতে প্রায়শই ওলাউঠা বা বিসূচিকা বা কলেরা রোগ মহামারী আকারে দেখা দিত  এবং এতে বহু লোকের প্রাণহানি ঘটত। তাই এ রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পল্লীবাসীরা ওলাদেবীর বা  ওলাইচন্ডী বা বারোয়ারি পূজা করত।
                                    পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা , কোলকাতা ,হাওড়া , বর্ধমান, বীরভূম, মেদিনীপুর প্রভৃতি অঞ্চলসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন পল্লীতে একসময় খুব গুরুত্বের সঙ্গে ওলাইচন্ডী বা ওলাদেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হতো। 
                                              হিন্দুপ্রধান অঞ্চলে শনি অথবা মঙ্গলবার পূজা হয় এবং পূজায় নিরামিষ নৈবেদ্য দেওয়া হয়। পূজার পৌরহিত্যে যেকোনো বর্ণ বা সম্প্রদায়ের লোকের এমন কি নারীরও অধিকার আছে। ওলাইচন্ডী বা ওলাদেবীর পূজা  তিন রকমের। শনিবার  ও  মঙ্গলবার অনাড়ম্বরে যে পূজা হয় তা বারের পূজা নাম পরিচিত। কারও মানত উপলক্ষে সামান্য আড়ম্বরের সঙ্গে যেকোনো সময় এঁর পূজা অনুষ্ঠিত হতে পারে।তাছাড়া কোথাও কলেরা রোগ মহামারী আকারে দেখা দিলে সে এলাকার লোকজন গ্রামের মোড়লের নেতৃত্বে সমষ্টিগতভাবে  এঁর পূজা দেয় ।
                                           ওলাইচন্ডী অন্যতম লৌকিক দেবতা। তিনি ওলাউঠা  বা বিসূচিকা বা কলেরা রোগের অধিষ্টাত্রী দেবী। তিনি ওলাইচন্ডী , ওলাবিবি ,বিবিমা  নামেও পরিচিত। ওলাদেবী অসাম্প্রদায়িক দেবতা অর্থাৎ ধৰ্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এঁর পূজা করা হত।
                                       ওলাইচন্ডী পূজা এককভাবেও  হয় আবার  ঝোলাবিবি , আজগৈবিবি , চাঁদবিবি , বাহড়বিবি , ঝেটুনেবিবি ও আসনবিবি এই ছয়জনের সঙ্গে একত্রেও হয়। এঁদের একত্রে বলা হয় সাতবিবি। করো কারো মতে এঁরা ব্রাহ্মী , মহেশ্বরী , বৈষ্ণবী , বারাহী , ইন্দ্রাণী প্রভৃতি পৌরাণিক দেবীর লৌকিক রূপ। সাতবিবির মধ্যে ওলাদেবীই প্রধান , ভক্তরা তাঁর উদ্দেশ্যেই পূজা দেয় , তবে অন্যরাও সে পূজার ভাগ পান। ওলাইচন্ডী বা ওলাদেবীর পূজা হয় পল্লীর বৃক্ষতলে পর্ণকুঠিরে । ওলাদেবীর পূজায় কোনো সাম্প্রদায়িকতা নেই। তবে দেবীর মূর্তি ও পূজাপদ্ধতিতে কিছুটা পার্থক্য ঘটত । হিন্দুপ্রধান অঞ্চলে এঁর আকৃতি হতো লক্ষী - সরস্বতীর মতো, গায়ের রং গাঢ় হলুদ বর্ণ , হাত দুটি প্রসারিত , কখনো  দন্ডায়মান , কখনো বা শিশুসন্তান ক্রোড়ে নিয়ে আসনে উপবিষ্টা , পরনে সাধারণত নীল শাড়ি এবং সর্বাঙ্গে নানা প্রকার অলংকার । 
                                    এই প্রসঙ্গে বলা যায় যে ওলাইচন্ডী পূজা শুধুমাত্র পূজা উৎসবে সীমিত থাকে না। এর মধ্যে থাকে গান, যাত্রাপালা, হরিনাম সংকীর্তন , প্রণাম খাটা , মেলা ইত্যাদি। বিভিন্ন জায়গায় ওলাইচন্ডী পূজার মূল  অংশ ঠিক থাকলেও ,বিভিন্ন অংশে হেরফের হয়।           


Monday 29 July 2019

How to Improve Your Motivational Skill, Prerana Series-2

প্রেরণা সিরিজ - ২
লেখক - প্রদীপ কুমার রায় 
                         জেতার অভ্যাস কেবলমাত্র জেতার জন্যই নয়, জেতা একটা অভ্যাস এবং এই অভ্যাসটা করা জরুরী । যতই  বড় হতে থাকবে ততই স্বাধীনতা পেতে থাকবে, কিন্তু মনে রাখতে হবে স্বাধীনতার উল্টো দিকটা আসলে দায়িত্ব । স্বাধীনতা= দায়িত্ব। নিজের দায়িত্ব, বাড়ির দায়িত্ব , সমাজের দায়িত্ব। 
                            একটি ব্যবসায়িক পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিলো যাতে সাংবাদিকরা একঝাঁক সফল  ব্যবসায়ীর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন , যারা প্রত্যেকেই তিন চার বার অসফল হওয়ার পর সাফ্যলের মুখ দেখেছিলেন । প্রত্যেক ব্যবসায়ী বলেছিলেন যে তাঁরা আজ এই জায়গায় আস্তে পারতেন না, যদি জীবনে বিফলতাগুলি না আসত । তাই সকলের মনে রাখা  উচিত যে আসাফল্যের মধ্যেই লুকিয়ে  আছে সাফল্যের বীজ । এমনকি শব্দকোষ বা ডিকসনারিতে "faliure " শব্দ আসে "success " এর আগে।
                          যখন তুমি যেটা চাইছো সেটা না পেয়ে , যেটা চাইছো না সেটা পাও তখন সেটাও হবে তোমার অভিজ্ঞতা । মনে রাখতে হবে সুস্থ  ও সফল জীবন লাভ করা যায় সুস্থ ও সুচিন্তার মধ্যে দিয়েই।ভবিষ্যতের যোগসূত্রগুলো আগাম চেনা যায় না। কিন্তু পরে পিছনে  ফিরে তাকিয়ে সেটা খুব ভালো বোঝা যায় । ওষুধটা খেতে ভয়ানক খারাপ  লাগে , কিন্তু রোগীর ওষুধটা দরকার । 
                         কখনও  কখনও  জীবন তোমার মাথায় একটা থান  ইঁটের মতো আঘাত করবে। বিশ্বাস হারালে চলবে না। নিজেকেই খুঁজে নিতে হবে নিজেদের ভালো লাগার জিনিষ । খুঁজে নিতেই হবে । কাজ তোমাদের জীবনে একটা বড় অংশ জুড়ে থাকবে।
                     তাই সন্তুষ্টি যদি চাও , তবে সেই কাজেই মনপ্রাণ ঢেলে দিতে হবে।যদি সত্যিই জীবনে আগে বাড়তে চাও তাহলে তোমাকে বুঝতে হবে জীবনের সংকেতটা , যেটা তোমার মানসিক উদ্যম বাড়াতে সাহায্য করবে। নিজেকে কখনও অবস্থার শিকার হতে দেবে না। তোমার জীবন সম্পর্কে অন্যের সংগা  নিও না, নিজে নিজেকে ব্যাখ্যা কর।

মোটিভেশনাল ভিডিও দেখতে উপরের ডানদিকের কর্নারে YouTube লিঙ্ক অথবা  এখানে Pkrnet এই লিঙ্কটির উপর ক্লিক করুন।




Saturday 27 July 2019

"গাজন" গ্রাম বাংলার এক প্রাচীন ও জনপ্রিয় লোক উৎসব - Gajan-A Folk Festival

লেখক - প্রদীপ কুমার রায় 
                          "গাজন" গ্রাম বাংলার এক প্রাচীন ও জনপ্রিয় লোক উৎসব ,অর্থাৎ গাজন হলো একটি বিশ্বাস । গাজন একটি হিন্দু উৎসব যেটা সাধারনতঃ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে পালিত হয়। এই উৎসব সাধারনতঃ শিব ঠাকুর ,নীল ঠাকুর বা ধৰ্ম ঠাকুর এর উদ্দেশ্যে পালিত হয়। প্রত্যেক বছর  চৈত্র মাসের শেষ দুই সপ্তাহে এই উৎসব পালিত হয়, যেটা কিনা শেষ হয় চরক পূজায় । কোথাও কোথাও  আবার এই উৎসব বৈশাখ  মাসেও পালিত হয় , যার শেষ হয় বুদ্ধপূর্ণিমায় ।

                        বিভিন্ন কাহিনী প্রচলিত আছে এই উৎসবের উৎস নিয়ে । এর মধ্যে সর্ব্বাধিক প্রচলিত বোধহয়ই বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের হিন্দু ধৰ্ম গ্রহণ করা নিয়ে। সময়ের সাথে সাথে এটি দেবাদিদেব মহাদেবের প্রতি উৎসর্গকৃত এক উৎসবে প্রিপরিণত  হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বলা যায় যে গাজন শুধুমাত্র গাজন উৎসবে সীমিত থাকে না। এর মধ্যে থাকে ময়ূরপঙ্খী গান, বোলান  গান , যাত্রাপালা , সং  সাজা , গল্প  ও সংলাপ বলা , মেলা ইত্যাদি।
                   
                     এই অনুষ্ঠান  দিনের ও রাতের উভয় বেলাতেই পালিত হয় , যার মধ্যে থাকে বিভিন্ন বীভৎস  উৎসর্গ ও নিজেদের শরীরে আঘাত করা , যেটা দেখলে যে কোনও বীরপুরুষের হৃদয়েও কম্প্ন্ন হাতে বাধ্য।গাজন শব্দটি পাওয়া যায় গর্জন বা "রোর "(roar ) , যা সন্ন্যাসীরা এই উৎসবে মাঝে মাঝেই উচ্চারণ করেন। অবশ্য , অন্যভাবে দেখলে বোঝা যায় গাজন শব্দটির দুটি অংশ আছে। একটি হলো গা অথার্ৎ গ্রাম এবং অন্যটি হলো জন অর্থাৎ জনসাধারণ বা গ্রামের মানুষজন । তাই বলা যায় গাজন হলো একটি গ্রামে পালিত গ্রাম্য উৎসব।
                    
                    শিবের গাজনে , শিব ঐ দিনে বিবাহ  করেন মা হারাকালীকে । আর সন্ন্যাসীরা হলেন বরযাত্রী । ধর্মের গাজনে ধর্ম ঠাকুর বিবাহ করেন মা কামিনী-কামাখ্যাকে , আর সন্ন্যাসীরা হলেন বরযাত্রী। ধর্মের গাজন সাধারনতঃ বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন গ্রামে দেখা যায়।

                       এই গাজন উৎসবের সম্পূর্ণ ইতিহাস পাওয়া যায় না। তবে এই উৎসবের প্রধান জিনিষটি হলো "সন্তুষ্টি" যেটা কিনা খোঁজা হয় যন্ত্রণা , উৎসর্গ  এবং ত্যাগের মাধ্যমে। আমরা সাধারণতঃ দেখে থাকি যে গ্রাম বাংলার দুটি নির্দ্দিষ্ট সময়ে উৎসব পালিত হয়। একটি হলো প্রাক বর্ষা এবং অন্যটি হলো বর্ষার পরে। গাজন উৎসব পালিত হয় প্রাক বর্ষায় । গাজন সাধারণতঃ পালিত হয় নিম্নবর্গীয় জাতিদের মধ্যে। প্রাক বর্ষা উৎসবের উদ্দেশ্য হলো পুনরায় শস্য উৎপাদনের সূচনা যেটা কিনা এই সকল নিম্নবর্গীয় জাতিদের মধ্যে আশার আলো  বা বেঁচে থাকার আলো  নূতনভাবে জাগৃত করে।

                    পশ্চিমবঙ্গের , বর্ধমান জেলার বিশেষ কিছু জায়গা গাজন উৎসব পালনের জন্য বিখ্যাত। যাদের মধ্যে দুটি জায়গা হলো কুড়মুন এবং কৃষ্ণদেবপুর । আমি পশ্চিমবঙ্গের , বর্ধমান জেলার নাড়ুগ্রামের নাড়েশ্বরের গাজন বিস্তারিতভাবে প্রতক্ষ্য  ও অনুধাবন করেছি । নাড়ুগ্রামের নাড়েশ্বরের এই গাজন অনুষ্ঠানের সময় সন্ন্যাসীরা মাঝে মাঝেই চীৎকার করে বলেন "বলো বলো নাড়েশ্বরের শিবমহাদেব " এবং কেউ কেউ মনে করেন যে এই চীৎকার বা গর্জন থেকেই এই উৎসবের নাম হয়েছে গাজন । এখানে মূল উৎসবটি  বিভক্ত হয়েছে ফল বিতরণ , রাত  গাজন এবং  দিন গাজনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে । প্রতিবৎসর বুদ্ধ পূর্ণিমায় পালিত হয় দিন গাজনের অনুষ্ঠান ,যা কিনা এই উৎসবের শেষ দিন। এখানে সন্ন্যাসীরা পা উপরে ও মাথা নিচে করে আগুনের  মধ্যে দোল খান , শক্ত পাটার উপর পেরেক পুঁতে তাতে শুয়ে মন্দিরতলায় আসেন , যেটার পোষাকি নাম "শালেভর " এবং এছাড়াও সন্ন্যাসীরা মন্দির তলায় আসেন "ঊর্ধ্বসেবার" মাধ্যমে  , যেখানে পা উপরদিকে রেখে মাথা ঝুলিয়ে সন্ন্যাসীদের আনা হয় মন্দির প্রাঙ্গনে যার মাধ্যমে শেষ হয় তাদের ব্রত ।

নিচের  গাজন উৎসবের ভিডিওটি দেখুন , যা কিনা মূলতঃ নারুগ্রামের নাড়েশ্বরের গাজনের অংশ ।



Friday 26 July 2019

দেবীর বাহন সিংহ হওয়া সত্বেও , কেন দেবীর ঘটকে আগমন ও গমন ?

লেখক - প্রদীপকুমার রায় 
                                        হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী মা দুর্গার আবির্ভাব হয়েছিলো ত্রিদেব - ব্রহ্মা ( সৃষ্টিকর্তা  ) , বিষ্ণু ( পালনকর্তা ) ও শিব (বিনাশকর্তা ) এর মিলিত শক্তিপুঞ্জ থেকে । মা দুর্গাকে সৃষ্টি করা হয় দানব মহিষাসুরকে যুদ্ধে পরাজিত করার জন্য । কারন মহিষাসুর এমন বরে বলিয়ান হয়েছিলেন যে তাকে কোনো  মানব , দানব বা দেবতা হত্যা করতে পারবে না, এমনকি  ব্রহ্মা , বিষ্ণু বা মহেশ্বরও  তাকে থামাতে সমর্থ হন নি । এমত  অবস্থায় ঐ ত্রিদেব  ব্রহ্মা ( সৃষ্টিকর্তা  ) , বিষ্ণু ( পালনকর্তা ) ও শিব (বিনাশকর্তা ) তাদের মিলিত শক্তি দিয়ে উৎপন্ন করেন এক মহাজাগতিক ও মহাসুন্দরী এক নারীশক্তির  , যিনি মা দুর্গা  নামে  অভিহিত হন ।
                                 
                                  এইবার দেবীর ঘোটকে আগমন  ঘোটকেই   গমন দেবীর বাহন সিংহ হওয়া সত্বেও , কেন দেবী ঘটকে আসবেন  ঘোটকেই যাবেন তা জানা দরকার এর উত্তর দুটি প্রাচীন গ্রন্থব্রহ্মাণ্ড পুরাণভগভতীদত্তম পাওয়া যায় এখানে বলা আছে সৃষ্টিকারী দেবতা ব্রহ্মার দশটি দেবশিশু ছিল। এইরকমই এক দেবশিশু মারিচীর নাতি কামণ্ডক কঠোর তপস্যায় দেবীকে তুষ্ট করেন। দেবী বরদানের জন্য মর্ত্যে আসেন কিন্তু ভক্ত কামণ্ডক দেবীর রণচণ্ডী রূপ দেখে ঘাবড়ে যান। তারই আনুরধে , তখন থেকেই দেবী মর্ত্যে যাওয়া আসার জন্য যুদ্ধবাহন  সিংহকে ছেড়ে হাতি , ঘোড়া , নৌকা দোলা-এই চারটি বাহন বেছে নেন। দেবী যাওয়া আসার জন্য প্রতি  বছর এক একটি বাহন বেছে নেন। এই বাহনেরাই সিংহ সমেত মা দুর্গাকে সপরিবারে মর্ত্যলোকে আনে এবং কৈ্লাসে ফেরত নিয়ে যায়। বাহন আনুসারে জগতে ঘটে নানা প্রাকৃতিক ঘটনা

ঘোড়া ( ঘোটক )- যুদ্ধ , খরা , দুর্ভিক্ষ     ;    দোলা    – ধ্বংস , প্রলয় , মড়ক   ;নৌকা   – বন্যা   ;  হাতি ( গজ )- শস্যপূর্ণ বসুন্ধরা
   
                                     দুর্গাদেবীর মন্ত্রের সুর ও শয্যা এমনই ধ্যানলব্ধ বিষয় যাহা  মহাভারত , চন্ডী , পুরাণ , ভাগবত কোথাও অস্বীকৃত হয় নি -- এমন কি বেদেও । প্রতিক্ষেত্রেই  দেবীর স্মরণ ও স্তুতি মাহাত্য স্বীকার করা হয়েছে । শব্দের শয্যার দ্বারা যে শ্রবন , মনন, নিদিধ্যাসন হয় তা মনোজ্ঞ  হলে সেটাই হবে ধ্যান । মনকে ত্রাণ করে যা, তাই হলো মন্ত্র আর তনকে (তনুদেহ )ত্রাণ  করে যা , তাই হলো তন্ত্র । আদি মন্ত্র  "ওম" থেকেই সম্ভবত "উমা" নামের উৎপত্তি । "ওম" অর্থাৎ অ-উ-ম , এতে আছে সৃষ্টি -স্থিতি -লয়ের বার্তা ।