Wednesday 13 May 2020

আপনার অনুপ্রেরণামূলক দক্ষতা কীভাবে উন্নত করবেন, সিরিজ-১১৪(প্রেরণা)[How to Improve Your Motivational Skill, Series-114(Prerana)]

 নিষ্কাম ভাবে কর্ম করাই কর্তব্য। ফলত্যাগই ত্যাগ। 

প্রেরণা সিরিজ ১১৪,PRERANA SERIES-114 (Motivational & Inspirational)
লেখক – প্ৰদীপ কুমার রায়।

আগেই বলে নিচ্ছি কেননা তোমরা পরে ভুলে যাবে বাকি অন্যান্যদের  সাহায্যের উদ্দেশ্যে শেয়ারটা মনে করে,করে দেবে এবং ডানদিকের উপরের কোনে অনুসরণ বাটন অবশ্যই ক্লিক করে অনুসরণ করবে।শুরু করছি আজকের বিষয় ।নমস্কার বন্ধুরা আমি প্রদীপ  তোমাদের সবাইকে আমার এই Pkrnet Blog  এ স্বাগতম।আশা করি সবাই তোমরা  ভালোই  আছো  আর  সুস্থ আছো।






অনেকে বলেন, নিষ্কাম কর্মে প্রণোদনা নেই, ইহা উদ্দেশ্য বিহীন। তাহা ঠিক নয়। কর্মেই সৃষ্টি, কর্মদ্বারাই সৃষ্টিরক্ষা, তাই প্রকৃতি সকলকেই কর্ম করান। জীবের কর্তব্য কর্মটিকে নিষ্কাম করে ভাগবত কর্মে পরিনত করা। ইহাই কর্মযোগ। কর্মী যদি স্বার্থান্বেষী হন, তবে জগতের দুঃখ মোচন হবে কিভাবে। তাই প্রহ্লাদ দুঃখ করে বলেছেন, ভাগবত (৭/৯/৪৪) — প্রায়েণ দেবমুনয়ঃ স্ববিমুক্তিকামা। মৌনং চরন্তি বিজনে ন পরার্থনিষ্ঠাঃ।


‘ প্রায়ই দেখা যায়, মুনিরা নির্জনে মৌনাবলম্বন করিয়া তপস্যা করেন, তাঁহারা লোকের দিকে দৃষ্টি করেন না। তাঁহারা ত পরার্থনিষ্ঠ নন, তাঁহারা নিজের মুক্তির জন্য ব্যস্ত, সুতরাং স্বার্থপর’। প্রাচীনকাল থেকেই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা কর্ম দ্বারাই গৌরব লাভ করেছিল, শিক্ষা সভ্যতায়, শিল্প সাহিত্যে, শৌর্য বীর্যে জগতে শীর্ষ স্হান অধিকার করেছিল। সেই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আজ অলস, অকর্মা, বাক্যবাগীশ বলে উপহাস্যস্পদ। এ দুর্দশা কেন? সনাতনীদের কর্ম হতে বিচ্যুত করলো কে? সনাতনীদের এই বুদ্ধিভেদ জন্মিল কিরূপে? ইতিমধ্যে বহু ধর্মাচার্যের আগমন ঘটেছে। তাঁদের মধ্যে মায়াবাদ, দ্বৈতবাদ, জ্ঞান, বৈরাগ্য, প্রেম, ভক্তি সবই ছিল, কিন্তু কর্মের প্রেরন নাই, কর্মপ্রশংসা নাই, র্মোপদেশ নাই। সন্ন্যাসবাদীরা বলেন, কর্ম বন্ধনের কারন, কর্মত্যাগই মুক্তি (১৮/৩), শ্রীভগবান বলিতেছেন, কর্ম ত্যাগ জীবের পক্ষে সম্ভব নয়, কর্ম ত্যাগে লোকরক্ষাও হয় না, সুতরাং নিষ্কাম ভাবে কর্ম করাই কর্তব্য। ফলত্যাগই ত্যাগ। নিষ্কাম কর্মীরা কর্ম বন্ধন হতে মুক্ত হয়। সেজন্য কর্ম ত্যাগের প্রয়োজন হয় না। ‘কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন'

বিবেকের অর্থ হলো - সত্য কি, মিথ্যা কি, শাশ্বত কি, নশ্বর কি এইসব কথা ঠিকমতো বুঝে নিজের ব্যবহারিক জীবনে ধারন করা। একমাত্র পরমাত্মাই সত্য, অবশিষ্ট যা কিছু আছে যেমন পরিবার, পুত্র, কন্যা, বাড়ী, চাকরী, দোকান, মিত্র, সম্বন্ধী, আপন, পর আদি সবই হলো অনিত্য। একদিন তাদের সবাইকে ছেড়ে চলে যেতে হবে। এই শরীরের সাথে সাথেই সমস্ত সম্বন্ধ, নিন্দা - প্রতিষ্ঠা, ধনী-গরীব, সুস্থ্য-অসুস্থ্য এইসব জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।

ভগবান শ্রী রামের গুরু মহর্ষি বৈশিষ্ট্য বলেছিলেন, হে রামজী, চন্ডালের ঘরে ভিক্ষা খেয়েও যদি সৎসঙ্গ পাওয়া যায়, আর তাতে শাশ্বত-নশ্বরের বিবেক জাগ্রত হয় তাহলে এই সৎসঙ্গ না ছাড়াই উচিৎ।গুরু বৈশিষ্ট্যের কথা কতটা অর্থপূন্য, কেননা এমন সৎসঙ্গ আমাদের নিজের শাশ্বত স্বরুপের দিকে নিয়ে যায়। যখন সংসারের অন্য ব্যবহার যদিও যেভাবেই উপলব্ধি করায়, অন্তে মৃত্যুর মুখেই নিয়ে যায়। এইজন্য সাধু সন্তের সান্নিধ্যে থেকে সৎসঙ্গ করা উচিৎ যাতে সত্যিকারের বিবেক জাগ্রত হয়, যার দ্বারা আমাদের সাত্ত্বিক মতি তৈরী হয়।

শ্রীশ্রী গীতাতে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন. যে এই পৃথিবীতে তোমার আপন বলতে কিছুই নেই। কি নিয়ে এসেছিলে,যা তুমি হারিয়েছ? বর্তমানে যা তোমার,পুর্বে তা অন্য কারো ছিলো এবং ভবিষ্যতেও সেটা অন্য কারো হয়ে যাবে।পরিবর্তনই তো সংসারের নিয়ম!কেনো তুমি কষ্ট পাচ্ছো?সংসারে সুখি সেই হতে পারে,যে প্রকৃত সুখ চিনতে পারে।আমরা যদি এইটুকু সত্য উপলব্ধি করতে পারি যে, এই সংসারে আমার বলতে কিছুই নেই সবকিছুর কর্তা সয়ং ভগবান।শূণ্য হাতে এসেছি,শূণ্য হাতেই যেতে হবে এই সংসার ছেরে, তাহলে সুখ অথবা দুঃখের কোন অবকাশই থাকে না।মৃত্যুর সময় যদি কোন কিছু সাথে যায়,তা হচ্ছে কর্মফল,ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাম।তাই,তাকে মনদিয়ে স্মরণ করো তিনি তোমায় রক্ষা করবেন।
পৃথিবীতে অধিকাংশ মানুষের কাছে মৃত্যু এক ভয়ানক জিনিস। শ্রীশ্রী গীতাতে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন.. মৃত্যুকে আমাদের নিত্য দিনের সঙ্গী বলেই মনে হয়। গীতার ব্যাখ্যা অনুসারে  আমরা আমাদের জীবনে প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছি। কারণ মৃত্যু বলতে শরীরের পরিবর্তন কে বোঝায়, এবং এই শরীর পরিবর্তন আমাদের জীবনে আমুল পরিবর্তন আনে। যেমন ধরেন, পাচ মাস বয়সে আপনি যাকে দেখেছেন, তাকে যদি পাচ বছর পর দেখেন, তাহলে খুব সম্ভব আপনি তাকে চিনতে পারবেন না। পাচ মাস বয়সে আপনি যে শরীর দেখেছেন,পাচ বছরে তা সম্পূর্ণ রুপে পরিবর্তন হয়েছে।এমনকি দেহের কোষগুলো ও পরিবর্তন হয়েছে।এভাবে শিশুকাল থেকে বৃদ্ধকাল পযন্ত প্রতিটি জীবেরই পরিবর্তন হচ্ছে।
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,শরীরের পরিবর্তনকে মৃত্যু বলে জানবে।ঠিক যেমন কেউ,শৈশব থেকে যৌবন,যৌবন থেকে বার্ধক্য, এবং একই ভাবে মৃত্যু সময়ে এক দেহ থেকে অন্য দেহ গ্রহন করে।যেমন, মহাভারতে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে পরিবারের অনেকে সদস্য নিহত হবে জেনে অর্জুন এতোটাই দূর্বল হয়ে পড়েন যে, তিনি যুদ্ধ করার ইচ্ছাটাই হারিয়ে ফেলেন,তিনি বলেন,আমি যদি যুদ্ধ করে ত্রিভুবন ও লাভ করি, তবুও আমি সুখি হতে পারবো না। অর্জুনের মতো প্রতিটা জীবেই মৃত্যু নিয়ে চিন্তিত। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসন্ন চিন্তিত অর্জুনকে মুক্ত করার জন্য পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাকে মৃত্যু সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছেন।মৃত্যু বলতে কি বোঝায়, মৃত্যু কি,মৃত্যু কেন হয়? কিছু কিছু মানুষ মনে করে, মৃত্যুর সাথে সবকিছু শেষ হয়ে যায় ।জড়দৃষ্টিকোন থেকে জীবন এবং দেহের শেষ হওয়াকে মৃত্যু বলে। কিন্তু আত্মা নিত্য, আত্মার কোন মৃত্যু হয় না
জীবনে অনুপ্রেরণার গুরুত্ব যে কতটা, তা আমরা কমবেশি  প্রত্যেকেই জানি। প্রত্যেক মানুষই চায়  তারা যেন সর্বদা অনুপ্রাণিত থাকেন। এই অনুপ্রেরণা মূলক বিচার গুলিকে বাস্তব জীবনে ঠিক  মত মেনে চললে যে কোনো মানুষের জীবন অনয়াসেই বদলে যেতে পারে ।

মোটিভেশনাল ভিডিও দেখতে উপরের ডানদিকের কর্নারে YouTube লিঙ্ক অথবা এখানে Pkrnet এই লিঙ্কটির উপর ক্লিক করুন। এতক্ষণ সময় দিয়ে পড়ার জন্যে তোমাকে  অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই  পিকেআর নেট  ব্লগ - এর পক্ষ থেকে | পোস্টটা ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই একটু Comment করে তোমার মতামত আমায় জানিও |তোমার মূল্যবান মতামত আমাকে বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাতে ভীষনভাবে সাহায্য করে।



No comments:

Post a Comment