লেখক –প্রদীপ কুমার রায়।
দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে -২ এর পর
দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে -২ এর পর
প্রত্যেকটি চারার অধিষ্টাত্রী এক একজন দেবী। কদলী - ব্রহ্মাণী , কচু - কালিকা , মান - চামুন্ডা , জয়ন্তী - কার্তিকী , বেল - শিবা, দাড়িম্ব (ডালিম) - রক্ত দন্তিকা , অশোক - শোকরহিতা , হরিদ্রা- দূর্গা , ধান - লক্ষ্মী ।
এই নবপত্রিকার স্নানেরও একটি বিধান শাস্ত্রে পাওয়া যায়। নির্দ্দিষ্ট চারা গাছকে নির্দ্দিষ্ট জলে স্নান করানোর মাধ্যমেই কলাবউকে শাস্ত্রসম্মত ও বিধিবদ্ধভাবে স্নান করানো হয়। ১ ) কদলী - গরম জল ২) কচু -তারাগের জল ৩) মান - রত্নদক (রত্ন জলে) ৪) জয়ন্তী - পুষ্পদক ( পুস্প জলে) ৫) বেল - সর্বৌষধি জলে ৬) দাড়িম্ব (ডালিম) -সমুদ্রজলে ৭) অশোক - সুগন্ধীজলে ৮) হরিদ্রা - শিশিরের জলে ৯) ধান - তিলতৈলযুক্ত জলে।
![]() |
WBCSBOOK |
দেবীর পুজো - পঞ্চ বিধ , দশবিধ বা ষোড়শ উপাচারে করা হয়। ষোড়শ উপাচারের ষোলোটি হলো - আসন, স্বাগত , পাদ্য, অর্ঘ্য, আচমনীয় , মধুপর্ক , পনরাচনীয় , স্থানীয় জল, বস্ত্র, ভূষণ , গন্ধ, পুস্প,ধুপ, দীপ , নৈবেদ্য ও চন্দন।
দেবীর পুজোয় স্নান ও যজ্ঞ থাকায়, এই পুজোকে মহাপুজো বলা হয়। এই পুজো পদ্ধতি বেশ কঠিন। এই ব্যাপারে তিনটি শাস্ত্র - বৃহন্নন্দিকেশ্বর , দেবীপুরাণ এবং কালিকাপুরাণ তিনটি মত রেখেছে।
নবপত্রিকা স্নানের পর পূজা শুরু হয় এবং দেবীর চক্ষুদান,দেবীর প্রাণপ্রতিষ্ঠা , মহাস্নান, ষোড়শ উপাচারে নিবেদন, হোম,বলিদান,শাস্ত্রপুজো , অঙ্গাবরণ পুজো ,চতুঃষষ্ঠী , যোগিনীর পুজো, দিক্পাল পুজো, সন্ধিপুজো , কুমারীপুজো ইত্যাদির মাধ্যমে ক্রমে ক্রমে পুজো সম্পন্ন হয়।
আমরা দেবীর পুজো করি শরৎকালে । একালে দেবী আসেন না , তাঁকে আনা হয়। ঠিক যেমন ব্রহ্মা এনেছিলেন বিষ্ণুর নিদ্রাভঙ্গের জন্য। দুর্গা পুজোর তিথি দুটি -শারদীয় ও বাসন্তী। শ্রাবন থেকে পৌষ - এই ছয়মাস সূর্যের দক্ষিণায়ন, এই সময় দেবদেবীগন নিদ্রিত অবস্থায় থাকেন । আর মাঘ থেকে আষাঢ় - এই ছয়মাস সূর্য্যের উত্তরায়ণ , এই সময় দেবতারা সদা জাগ্রত অবস্থায় থাকেন। শরৎকালে তাই দেবীকে জাগাতে হয়। এটা স্বতঃপ্রনোদিতভাবে আবির্ভাবের লগ্ন নয় । তাই অকালে আবাহনের প্রয়োজন হয়।ঊষার প্রতীক সরস্বতী , মধ্যাহ্নের প্রতীক দেবীদুর্গা এবং গোধূলির প্রতীক লক্ষ্মী ।
No comments:
Post a Comment