Saturday, 3 August 2019

দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে-৩ ( Durga Pujor Prakkale - 3 )

লেখক –প্রদীপ কুমার রায়
দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে - এর পর 

                                               প্রত্যেকটি চারার অধিষ্টাত্রী এক একজন দেবী।  কদলী  - ব্রহ্মাণী  , কচু - কালিকা , মান - চামুন্ডা , জয়ন্তী - কার্তিকী  , বেল - শিবাদাড়িম্ব (ডালিম) - রক্ত  দন্তিকা , অশোক  - শোকরহিতা , হরিদ্রা- দূর্গা , ধান - লক্ষ্মী

                                                    এই নবপত্রিকার স্নানেরও  একটি বিধান শাস্ত্রে পাওয়া যায়। নির্দ্দিষ্ট চারা গাছকে নির্দ্দিষ্ট জলে স্নান করানোর মাধ্যমেই কলাবউকে শাস্ত্রসম্মত বিধিবদ্ধভাবে স্নান করানো হয়।    ) কদলী - গরম জল    )    কচু -তারাগের  জল     ) মান  -  রত্নদক (রত্ন জলে) জয়ন্তী  - পুষ্পদক  ( পুস্প জলে) বেল - সর্বৌষধি  জলে  ) দাড়িম্ব (ডালিম) -সমুদ্রজলে ) অশোক - সুগন্ধীজলে ) হরিদ্রা - শিশিরের জলে  ) ধান - তিলতৈলযুক্ত জলে।
WBCSBOOK 
                                                এই  স্নানের  শেষে হয় মহাস্নান মহাস্নানে লাগে গঙ্গার জল , বৃষ্টির জল, সরস্বতী নদীর জল, সমুদ্রের জল, পদ্মরেণুযুক্ত জল, নির্ঝরের জল, সর্বতীর্থ জল, চন্দনবাসিত জল এই পরে  প্রয়োজন হয়  চন্দনপঞ্চশস্যতেলহলুদপিটুলি, পঞ্চামৃত পঞ্চকাষায় , পঞ্চ- শস্যদক , রজত জল, স্বর্ণ জল , মধু, ঘি, দুধ, নারকেল জল, আখের রস, দই , তিল, অগুরু , শিশির , বৃষ্টির জল ইত্যাদি।
                                                দেবীর পুজো - পঞ্চ বিধ , দশবিধ  বা  ষোড়শ   উপাচারে  করা  হয়। ষোড়শ  উপাচারের ষোলোটি হলো - আসন, স্বাগত , পাদ্য, অর্ঘ্য, আচমনীয় , মধুপর্ক , পনরাচনীয় , স্থানীয় জল, বস্ত্র, ভূষণ , গন্ধ, পুস্প,ধুপ, দীপ , নৈবেদ্য চন্দন।
                                                দেবীর পুজোয় স্নান যজ্ঞ  থাকায়এই  পুজোকে  মহাপুজো বলা হয়।  এই  পুজো  পদ্ধতি  বেশ  কঠিন।  এই  ব্যাপারে তিনটি শাস্ত্র - বৃহন্নন্দিকেশ্বর , দেবীপুরাণ  এবং কালিকাপুরাণ তিনটি মত রেখেছে।
                                                 নবপত্রিকা স্নানের পর পূজা শুরু হয় এবং দেবীর চক্ষুদান,দেবীর প্রাণপ্রতিষ্ঠা , মহাস্নানষোড়শ উপাচারে নিবেদন, হোম,বলিদান,শাস্ত্রপুজো , অঙ্গাবরণ পুজো ,চতুঃষষ্ঠী , যোগিনীর  পুজো, দিক্পাল  পুজো, সন্ধিপুজো , কুমারীপুজো ইত্যাদির মাধ্যমে ক্রমে ক্রমে পুজো সম্পন্ন হয়।
                                                 আমরা দেবীর পুজো করি শরৎকালে   একালে  দেবী  আসেন  না , তাঁকে আনা হয়। ঠিক যেমন ব্রহ্মা এনেছিলেন বিষ্ণুর  নিদ্রাভঙ্গের  জন্য। দুর্গা  পুজোর  তিথি   দুটি -শারদীয় বাসন্তী। শ্রাবন থেকে পৌষ - এই ছয়মাস সূর্যের দক্ষিণায়ন, এই সময় দেবদেবীগন নিদ্রিত অবস্থায় থাকেন আর মাঘ থেকে  আষাঢ়এই ছয়মাস সূর্য্যের উত্তরায়ণ , এই  সময় দেবতারা সদা জাগ্রত অবস্থায় থাকেন। শরৎকালে তাই দেবীকে জাগাতে হয়। এটা স্বতঃপ্রনোদিতভাবে  আবির্ভাবের লগ্ন নয় তাই অকালে আবাহনের প্রয়োজন হয়।ঊষার প্রতীক সরস্বতী , মধ্যাহ্নের প্রতীক দেবীদুর্গা এবং গোধূলির প্রতীক লক্ষ্মী     





No comments:

Post a Comment